বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি

ওয়েবসাইট কি? নতুনদের জন্য পূর্ণাঙ্গ গাইড

ওয়েবসাইট সম্পর্কে সাধারণ ধারণা থেকে শুরু করে নিজের একটি ওয়েবসাইট তৈরি ও রক্ষণাবেক্ষণের পুরো প্রক্রিয়া জেনে নিন।

ওয়েবসাইট আজকের ডিজিটাল যুগে একটি অপরিহার্য অংশ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এটি কেবল ব্যবসা বা ব্র্যান্ডের জন্য নয়, ব্যক্তিগত ব্যবহারের জন্যও একটি শক্তিশালী মাধ্যম হয়ে উঠেছে। অনলাইনে উপস্থিতি তৈরি করার জন্য ওয়েবসাইট একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে, যা ব্যবহারকারীদের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপন, তথ্য শেয়ার করা, অথবা পণ্য বিক্রি করার সুযোগ দেয়। এই আর্টিকেলে আমরা ওয়েবসাইট কি সে সম্পর্কে বিস্তারিত জানব এবং নতুনদের জন্য কীভাবে একটি ওয়েবসাইট তৈরি ও রক্ষণাবেক্ষণ করা সহজ হবে সে সম্পর্কে আলোচনা করা হবে।

Table of Contents

ওয়েবসাইট কি বা ওয়েবসাইট কাকে বলে?

ওয়েবসাইট হল একটি ডিজিটাল ঠিকানা বা ভার্চুয়াল স্থান যেখানে বিভিন্ন তথ্য, ছবি, ভিডিও বা পরিষেবা ইন্টারনেটের মাধ্যমে প্রদর্শন করা হয়। সহজভাবে বললে, একটি ওয়েবসাইট অনেকগুলো ওয়েব পেজের সমষ্টি যেখানে আপনি নির্দিষ্ট বিষয় বা প্রতিষ্ঠান সম্পর্কিত বিভিন্ন তথ্য এক জায়গায় পেতে পারেন।

যখন আপনি মোবাইল বা কম্পিউটার দিয়ে একটি নির্দিষ্ট নাম টাইপ করে ইন্টারনেটে ঢোকেন, যেমন www.google.com বা www.spherechronicles.net, তখন আপনি মূলত সেই ওয়েবসাইটে প্রবেশ করেন। প্রতিটি ওয়েবসাইটে থাকে একটি নির্দিষ্ট ডোমেইন নাম (যেমন: spherechronicles.net) এবং সেটি সংরক্ষিত থাকে ওয়েব হোস্টিং নামক একটি সার্ভারে।

একটি ওয়েবসাইট হতে পারে ব্যক্তিগত, ব্যবসায়িক, শিক্ষামূলক, বা বিনোদনমূলক। এটি মানুষের তথ্য জানার, পণ্য কেনাবেচার, যোগাযোগের বা আয়ের মাধ্যম হিসেবেও কাজ করে।


ওয়েব পেজ বনাম ওয়েবসাইট


অনেকেই “ওয়েব পেজ” আর “ওয়েবসাইট” শব্দ দুটি একসাথে ব্যবহার করলেও আসলে এই দুটি জিনিস এক নয়।

ওয়েব পেজ কী?

ওয়েব পেজ হল একটি নির্দিষ্ট পৃষ্ঠা যা ইন্টারনেটে দেখা যায়। এটি একটি একক পেইজ যেখানে কিছু নির্দিষ্ট তথ্য, ছবি বা ভিডিও থাকতে পারে। যেমন, আপনি এখন যেটা পড়ছেন, এই লেখাটি একটি ওয়েব পেজে প্রকাশিত।

উদাহরণ:

  • একটি ব্লগ পোস্ট
  • একটি প্রোডাক্ট ডিটেইলস পেইজ
  • একটি “আমাদের সম্পর্কে” পৃষ্ঠা

ওয়েব পেজ ও ওয়েবসাইটের মূল পার্থক্য

বিষয়ওয়েব পেজওয়েবসাইট
গঠনএকটি নির্দিষ্ট পৃষ্ঠাঅনেকগুলো পৃষ্ঠার সমষ্টি
উদাহরণএই লেখাটি একটি পেইজwww.spherechronicles.net (সম্পূর্ণ সাইট)
সম্পর্কওয়েবসাইটের অংশওয়েবসাইট অনেক পেইজ নিয়ে গঠিত

সংক্ষেপে, প্রতিটি ওয়েব পেজই একটি ওয়েবসাইটের অংশ, আর একটি ওয়েবসাইট হল অনেক ওয়েব পেজের সমন্বয়।


ওয়েবসাইট কীভাবে কাজ করে?


আমরা প্রতিদিনই বিভিন্ন ওয়েবসাইট ব্যবহার করি — কখনও খবর পড়ি, কখনও পণ্য কিনি, আবার কখনও ভিডিও দেখি। কিন্তু আপনি কি জানেন একটি ওয়েবসাইট ইন্টারনেটে কীভাবে কাজ করে? 

ওয়েবসাইট কি সেটি জানার পরে এখন চলুন আমরা ধাপে ধাপে ওয়েব সার্ভার, ব্রাউজার, ফ্রন্টএন্ড, ব্যাকএন্ড, এবং প্রযুক্তির ব্যবহার কীভাবে একটি ওয়েবসাইটকে সচল রাখে সে সম্পর্কে জানার চেষ্টা করি।


ওয়েব সার্ভার ও ব্রাউজারের ভূমিকা

ওয়েব সার্ভার হল একটি বৃহৎ কম্পিউটার যা ইন্টারনেটের সাথে সংযুক্ত থাকে এবং সেখানে ওয়েবসাইটের সব ফাইল (HTML, ছবি, ডাটাবেজ ইত্যাদি) সংরক্ষিত থাকে। যখন আপনি ব্রাউজারে বা গুগলের সার্স বারে একটি ওয়েব ঠিকানা টাইপ করেন (যেমন: www.spherechronicles.net), তখন সেই অনুরোধটি চলে যায় সরাসরি ওয়েব সার্ভারে যেখানে ঐ ওয়েবসাইটের সকল ফাইল ও তথ্য সংরক্ষিত আছে।

ব্রাউজার মূলত (যেমন Chrome, Firefox, Edge) সার্ভার থেকে তথ্য নিয়ে তা ব্যবহারকারীর স্ক্রিনে সুন্দরভাবে দেখানোর কাজ করে। আপনি যা দেখেন যেমন টেক্সট, ছবি, বাটন, সবকিছুই ব্রাউজার ওয়েব সার্ভার থেকে ডেটা এনে উপস্থাপন করে।

সহজ ভাষায়:
আপনি যখন ওয়েবে ঠিকানা টাইপ করেন তখন ব্রাউজার সার্ভার থেকে তথ্য এনে তা আপনার সামনে উপস্থাপন করে।


ফ্রন্টএন্ড ও ব্যাকএন্ড ব্যাখ্যা

একটি ওয়েবসাইট মূলত দুটি অংশে বিভক্ত: ফ্রন্টএন্ড ও ব্যাকএন্ড।

  • ফ্রন্টএন্ড: এটি ওয়েবসাইটের সেই অংশ যেটি আপনি দেখতে পান ও ব্যবহার করতে পারেন। উদাহরণ: মেনু, ছবি, বাটন, ফর্ম ইত্যাদি। এটি তৈরি হয় HTML, CSS ও JavaScript দিয়ে।
  • ব্যাকএন্ড: এটি ওয়েবসাইটের অভ্যন্তরীণ অংশ যেটি ব্যবহারকারীরা দেখতে পান না। এখানে ডেটাবেস, সার্ভার লজিক, ইউজার ম্যানেজমেন্ট প্রভৃতি কাজ সম্পাদন হয়। এটি তৈরি হয় PHP, Python, Node.js, MySQL ইত্যাদি প্রযুক্তি দিয়ে।

সহজ ভাষায়:

ফ্রন্টএন্ড হল রেস্টুরেন্টের খাবার ও পরিবেশ আর ব্যাকএন্ড হল রান্নাঘরের কাজ ও ব্যবস্থাপনা।


HTML, CSS, JS ও CMS কীভাবে কাজ করে

একটি ওয়েবসাইট কাজ করতে নিচের প্রযুক্তিগুলি বিশেষ ভূমিকা রাখে:

  • HTML (HyperText Markup Language): এটি ওয়েব পেজের কঙ্কাল তৈরি করে। কোন টেক্সট কোথায় থাকবে, ছবি কীভাবে দেখাবে, এসব নির্ধারণ করে HTML।
  • CSS (Cascading Style Sheets): CSS ব্যবহার করে ওয়েবসাইটের রং, ডিজাইন, লেআউট, ফন্ট ইত্যাদি সাজানো হয়। এটি ওয়েবপেজকে চোখে লাগার মতো করে তোলে।
  • JavaScript (JS): JS ওয়েবসাইটকে ইন্টারঅ্যাকটিভ করে তোলে। উদাহরণ: ফর্ম জমা দেওয়া, ছবি স্লাইড, ডায়নামিক কনটেন্ট লোড হওয়া ইত্যাদি।
  • CMS (Content Management System): CMS এমন একটি সফটওয়্যার যা দিয়ে আপনি কোডিং না জেনেও ওয়েবসাইট তৈরি ও পরিচালনা করতে পারেন। উদাহরণ: WordPress, Joomla, Wix, Drupal

একসাথে চিন্তা করলে:
HTML ওয়েবসাইটের গঠন, CSS এর সাজসজ্জা, JS এর ইন্টারঅ্যাকশন আর CMS এর মাধ্যমে আপনি সহজে পুরো সিস্টেম চালাতে পারেন।


ওয়েবসাইটের প্রকারভেদ


ব্যক্তিগত ওয়েবসাইট

ব্যক্তিগত ওয়েবসাইট মূলত ব্যক্তিগত পরিচয়, অভিজ্ঞতা, ব্লগ বা শখের বশে তৈরি করা হয়। এটি কারও আত্মপ্রকাশ, মতামত শেয়ার বা নিজের অনলাইন পরিচিতি গড়ে তুলতে সহায়ক। অনেক সময় এটি পোর্টফোলিও আকারেও থাকে।

উদাহরণ:

– নিজের জীবনের গল্প, ভ্রমণ ব্লগ, ব্যক্তিগত প্রোফাইল ওয়েবসাইট ইত্যাদি।

ব্যবসায়িক ওয়েবসাইট

কোনও কোম্পানি বা প্রতিষ্ঠানের তার পণ্য ও সেবা সম্পর্কে ভোক্তাদের তথ্য জানাতে ব্যবহৃত ওয়েবসাইট। এতে প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে বিস্তারিত, ক্লায়েন্ট রিভিউ, যোগাযোগের মাধ্যম, ও সেবার তালিকা থাকে। এটি ব্র্যান্ড ইমেজ তৈরি ও ব্যবসা বাড়াতে সহায়ক ভূমিকা রাখে।

উদাহরণ:

– একটি কোম্পানির অফিসিয়াল ওয়েবসাইট, সার্ভিস লিস্ট, ক্লায়েন্ট টেস্টিমোনিয়াল ইত্যাদি।

ই-কমার্স ওয়েবসাইট

এই ধরনের ওয়েবসাইটে ক্রেতারা অনলাইনে পণ্য ব্রাউজ করে অর্ডার দিতে পারেন। পণ্য তালিকা, দাম, ডিসকাউন্ট, পেমেন্ট গেটওয়ে ও অর্ডার ট্র্যাকিং সিস্টেম থাকে। ই-কমার্স সাইট বর্তমানে অনলাইন ব্যবসার অন্যতম প্রধান মাধ্যম।

উদাহরণ:

– Daraz, Rokomari, Amazon

ব্লগ ও নিউজ পোর্টাল

ব্লগ ওয়েবসাইটে ব্যক্তিগত বা পেশাদার লেখকরা নিয়মিত কনটেন্ট প্রকাশ করেন আর নিউজ পোর্টালে বিভিন্ন বিষয়ে তাৎক্ষণিক সংবাদ, বিশ্লেষণ ও আপডেট দেওয়া হয়। পাঠকেরা তথ্য ও জ্ঞান অর্জনের জন্য এই ওয়েবসাইটগুলো অনুসরণ করেন।

উদাহরণ:

The Sphere Chronicles, Prothom Alo, The Daily Star, Techtunes, Personal Blog on Travel or Tech

শিক্ষা ওয়েবসাইট

শিক্ষামূলক ওয়েবসাইটে অনলাইন ক্লাস, ভিডিও লেকচার, রিসোর্স, কুইজ ও কোর্স কন্টেন্ট থাকে। এটি শিক্ষার্থীদের স্বশিক্ষায় সহায়তা করে। বেশিরভাগ বিশ্ববিদ্যালয় ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান তাদের সেবা ও ভর্তি প্রক্রিয়া পরিচালনার জন্য ওয়েবসাইট ব্যবহার করে।

উদাহরণ:

– 10 Minute School, Coursera, University Websites

পোর্টফোলিও ওয়েবসাইট

পোর্টফোলিও ওয়েবসাইটে একজন পেশাদার বা ফ্রিল্যান্সার তার দক্ষতা, কাজের নমুনা, প্রজেক্ট, ও কন্টাক্ট ইনফো শেয়ার করেন। এটি চাকরি, ক্লায়েন্ট পাওয়া বা নিজের ব্র্যান্ডিংয়ের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। ডিজাইনার, ডেভেলপার ও লেখকদের মধ্যে এটি খুব জনপ্রিয়।

উদাহরণ:

– গ্রাফিক ডিজাইনার, ওয়েব ডেভেলপার, কনটেন্ট রাইটার, ফটোগ্রাফারদের জন্য আদর্শ।


ওয়েবসাইট তৈরির ধাপ


একটি ওয়েবসাইট কি সহজেই তৈরি করা যায়? খুব কঠিন নয় আবার সহজেই করা যায় বলা যাবে না, সফল ওয়েবসাইট তৈরির জন্য নির্দিষ্ট কিছু ধাপ অনুসরণ করা গুরুত্বপূর্ণ। আইডিয়া থেকে শুরু করে সেটি অনলাইনে চালু করা পর্যন্ত প্রতিটি পর্যায়ে সঠিক পরিকল্পনা ও সিদ্ধান্ত গ্রহণের প্রয়োজন হয়। নিচে ধাপে ধাপে সেই প্রক্রিয়াগুলো তুলে ধরা হলো।

  • ডোমেইন নাম নির্বাচন: ওয়েবসাইটের ঠিকানা হিসেবে ব্যবহৃত নামই হলো ডোমেইন। এটি ইউনিক ও সহজে মনে রাখা যায় এমন হওয়া উচিত। ব্র্যান্ড বা উদ্দেশ্যের সাথে মিল রেখে ডটকম, ডটনেট বা দেশভিত্তিক এক্সটেনশন ব্যবহার করা যায়।
  • হোস্টিং সার্ভিস নির্বাচন: ওয়েবসাইটের ফাইল ও ডেটা অনলাইনে সংরক্ষণের জন্য হোস্টিং প্রয়োজন। ভালো স্পিড, আপটাইম ও সিকিউরিটির নিশ্চয়তা দেওয়া রিলায়েবল হোস্টিং সার্ভিস বেছে নেওয়া গুরুত্বপূর্ণ। শেয়ার্ড, VPS বা ক্লাউড হোস্টিং জনপ্রিয় অপশন।
  • ডিজাইন ও ডেভেলপমেন্ট: ওয়েবসাইট ডিজাইন মানে এর লুক ও ইউজার এক্সপেরিয়েন্স তৈরি করা, আর ডেভেলপমেন্ট মানে সেই ডিজাইনকে কোডিং এর মাধ্যমে জীবন্ত করা। এটি HTML, CSS, JavaScript ও CMS ব্যবহার করে করা হয়। ইউজার-ফ্রেন্ডলি ডিজাইন অর্গানিক ট্র্যাফিক নিশ্চিতে অতীব জরুরি বিষয়।
  • কনটেন্ট তৈরির কৌশল: ওয়েবসাইটের মূল আকর্ষণই হচ্ছে কনটেন্ট। পাঠকের দরকার মতো তথ্যপূর্ণ, সহজ ভাষায় লেখা এবং SEO-ফ্রেন্ডলি কনটেন্ট তৈরি করাই কৌশল। টেক্সট, ইমেজ, ভিডিও সবকিছু পরিকল্পনা করে যুক্ত করতে হয়।
  • SEO ও অনলাইন মার্কেটিং: সার্চ ইঞ্জিনে ওয়েবসাইটের দৃশ্যমানতা বাড়াতে প্রয়োজন সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন (SEO)। পাশাপাশি সোশ্যাল মিডিয়া, ব্লগ পোস্ট, ই-মেইল মার্কেটিং ও বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে ট্র্যাফিক আনা হয়। এটি ওয়েবসাইটের সফলতার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ধাপ।

ওয়েবসাইট এর কাজ কি, কেন ওয়েবসাইট থাকা জরুরি?


ওয়েবসাইটের মূল কাজ হলো অনলাইনে তথ্য প্রদর্শন, পণ্য বা সেবা উপস্থাপন এবং ব্যবহারকারীর সঙ্গে সংযোগ স্থাপন করা। বর্তমান যুগে এটি শুধু একটি তথ্যভাণ্ডার নয় বরং এটি ব্যক্তিগত ও ব্যবসায়িক ব্র্যান্ডিংয়ের শক্তিশালী মাধ্যম।

  • ব্যক্তিগত ব্র্যান্ডিং: নিজের দক্ষতা, অভিজ্ঞতা বা পোর্টফোলিও অনলাইনে তুলে ধরার মাধ্যমে একজন পেশাদার নিজের পরিচিতি গড়ে তুলতে পারেন।
  • ব্যবসা সম্প্রসারণ: ব্যবসায়ীরা ওয়েবসাইট ব্যবহার করে গ্রাহকদের কাছে পণ্য বা সেবা তুলে ধরতে পারেন এবং স্থানীয় থেকে গ্লোবাল মার্কেটে প্রবেশ করতে পারেন।
  • অনলাইন ইনকামের সুযোগ: ব্লগিং, অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং, ই-কমার্স, বিজ্ঞাপন বা কোর্স বিক্রির মাধ্যমে ওয়েবসাইট থেকে আয় করা যায়।
  • পেশাদারিত্ব ও তথ্য প্রচার: একটি ওয়েবসাইট কোন প্রতিষ্ঠান বা ব্যক্তির পেশাদার ইমেজ গড়ে তোলে এবং নির্ভরযোগ্যভাবে তথ্য ছড়াতে সাহায্য করে।

ওয়েবসাইট রক্ষণাবেক্ষণ ও নিরাপত্তা


ওয়েবসাইটের রক্ষণাবেক্ষণ ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করা প্রতিটি ওয়েবসাইট মালিকের জন্য অপরিহার্য। একটি ওয়েবসাইট চালু হওয়ার পর কাজ শেষ হয় না, বরং তখনই শুরু হয় নিয়মিত দেখভালের প্রক্রিয়া। ওয়েবসাইটে ব্যবহৃত থিম, প্লাগইন বা সফটওয়্যারের নিয়মিত আপডেট না দিলে সাইট ধীরে চলতে পারে বা নিরাপত্তা ঝুঁকি দেখা দিতে পারে। সেইসঙ্গে সার্ভার সমস্যা, হ্যাকিং বা অনিচ্ছাকৃত ডেটা মুছে যাওয়ার মতো পরিস্থিতির জন্য নিয়মিত ব্যাকআপ রাখা দরকার যেন সহজে ওয়েবসাইট পুনরুদ্ধার করা যায়।

নিরাপত্তার জন্য SSL সার্টিফিকেট থাকা আবশ্যক যা ওয়েবসাইটের URL-এ HTTPS যুক্ত করে এবং ব্যবহারকারীর তথ্য সুরক্ষিত রাখে। এ ছাড়া সাইটে ফায়ারওয়াল, অ্যান্টি-ম্যালওয়্যার টুল, শক্তিশালী পাসওয়ার্ড ও লগইন সিকিউরিটি ব্যবস্থা থাকা উচিত। এভাবে ওয়েবসাইট রক্ষণাবেক্ষণ ও সুরক্ষা নিশ্চিত করলে তা শুধু ব্যবহারকারীর আস্থা অর্জনই করে না, বরং গুগলের মতো সার্চ ইঞ্জিনেও ভালো র‍্যাঙ্ক পেতে সহায়তা করে।


বাংলাদেশে ওয়েবসাইট তৈরির খরচ


বাংলাদেশে ওয়েবসাইট তৈরির খরচ বিভিন্ন বিষয়ের উপর নির্ভর করে, যেমন: ওয়েবসাইটের ধরণ, ফিচার, ডিজাইন এবং আপনি নিজে করবেন নাকি পেশাদারের সাহায্য নিবেন

ডোমেইন ও হোস্টিং খরচ

বাংলাদেশে একটি ডোমেইনের বাৎসরিক খরচ সাধারণত ১,২০০ থেকে ২,৫০০ টাকার মধ্যে হয়ে থাকে। হোস্টিং সার্ভিসের মাসিক খরচ ২০০ থেকে ১,৫০০ টাকা পর্যন্ত হতে পারে, এটি নির্ভর করে সার্ভারের স্পেস, স্পিড ও সাপোর্ট সুবিধার উপর।

ডেভেলপারের ফি

আপনি যদি পেশাদার ডেভেলপারের সাহায্যে ওয়েবসাইট বানাতে চান, তাহলে খরচ হবে ওয়েবসাইটের ধরণ ও জটিলতার ওপর। সাধারণত ৫,০০০ টাকা থেকে শুরু করে একটি পূর্ণাঙ্গ ওয়েবসাইট তৈরিতে ৫০,০০০ টাকার বেশিও খরচ হতে পারে। বড় ই-কমার্স সাইট বা কাস্টম ফিচার চাইলে খরচ বহুগুণে বাড়তে পারে।

নিজে করব নাকি পেশাদার নিব

যদি আপনি নিজেই WordPress বা Wix-এর মতো প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করতে পারেন, তাহলে খরচ কমিয়ে আনা সম্ভব। তবে প্রযুক্তিগত জ্ঞান না থাকলে পেশাদারের সাহায্য নেওয়া ভালো, কারণ এতে ওয়েবসাইট আরও প্রফেশনাল ও কার্যকর হয়। সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে বাজেট, সময় ও স্কিল, সব দিক বিবেচনা করা গুরুত্বপূর্ণ।


নিষ্কর্ষ


একটি সফল ওয়েবসাইট কি শুধু তথ্য প্রদর্শন করে? না, বরং এটি পেশাদারিত্ব, ব্যবসায়িক উন্নতি এবং অনলাইন ইনকাম সৃষ্টির একটি শক্তিশালী মাধ্যম হিসেবে কাজ করে। তবে সঠিক পরিকল্পনা, উন্নত প্রযুক্তি এবং নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণের মাধ্যমে ওয়েবসাইটের কার্যক্ষমতা নিশ্চিত করতে হবে।

Tasnia Afroz

Tasnia Afroz

Tasnia Afroz is an Associate Editor of The Sphere Chronicles. She is a passionate writer of Bengali Language with a deep interest in the intersection of technology and culture. As a key contributor to The Sphere Chronicles, she explores a wide range of topics and crafts stories that inform, inspire, and engage our audience.

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button